হারুনুর রশিদ ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি :
আগামীকাল ২০ আগষ্ট, বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমানের ৫১তম শাহাদাত বার্ষিকী। এ উপলক্ষে রায়পুরা উপজেলায় সরকারি বেসরকারি এবং তাঁর নামে প্রতিষ্ঠিত বিভিন্ন সংগঠন বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।
উল্লেখ্য যে, বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান ১৯৪১ সালের ২৯ নভেম্বর পুরান ঢাকার ১০৯ আগা সাদেক রোডের পৈত্রিক বাড়ি “মোবারক লজ”-এ জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর আদি নিবাস নরসিংদী জেলার রায়পুরার মুছাপুর ইউনিয়নের রামনগর গ্রামে। পরবর্তীতে বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমানের সম্মানার্থে রামনগর গ্রামকেই মতিউরনগর গ্রামে নতুনভাবে নামকরণ করা হয়।
৯ ভাই ও ২ বোনের মধ্যে মতিউর ৬ষ্ঠ। তাঁর বাবা মৌলভী আবদুস সামাদ, মা সৈয়দা মোবারকুন্নেসা খাতুন। ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল থেকে ষষ্ঠ শ্রেণী পাস করার পর সারগোদায় পাকিস্তান বিমান বাহিনী পাবলিক স্কুলে ভর্তি হন। ডিস্টিংকশনসহ মেট্রিক পরীক্ষায় সাফল্যের সাথে প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হন। ১৯৬১ সালে বিমান বাহিনীতে যোগ দেন।
১৯৬৩ সালের জুন মাসে রিসালপুর পি,এ,এফ কলেজ থেকে কমিশন লাভ করেন এবং জেনারেল ডিউটি পাইলট হিসাবে নিযুক্ত হন ২০ই আগস্ট সকালে করাচির মৌরিপুর বিমান ঘাঁটিতে তারই এক ছাত্র রশীদ মিনহাজের কাছ থেকে জঙ্গি বিমান ছিনতাই করেন। কিন্তু রশীদ এ ঘটনা কন্ট্রোল টাওয়ারে জানিয়ে দিলে, অপর চারটি জঙ্গি বিমান মতিউরের বিমানকে ধাওয়া করে।
এ সময় রশীদের সাথে মতিউরের ধ্বস্তাধস্তি চলতে থাকে এবং এক পর্যায়ে রশীদ ইজেক্ট সুইচ চাপলে মতিউর বিমান থেকে ছিটকে পড়েন এবং বিমান উড্ডয়নের উচ্চতা কম থাকায় রশীদ সহ বিমানটি ভারতীয় সীমান্ত থেকে মাত্র ৩৫ মাইল দূরে থাট্টা এলাকায় বিমানটি বিধ্বস্ত হয়।
মতিউরের সাথে প্যারাসুট না থাকাতে তিনি ১৯৭১ সালের এই দিনে উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়ে শাহাদাতবরণ করেন।
ভারতীয় সীমান্তের ৩৫ মাইল দূরে থাট্টায় উড়োজাহাজটি বিধ্বস্ত হয়।
তাঁর মরদেহ ঘটনাস্থল থেকে প্রায় আধা মাইল দূরে পাওয়া যায়।
২০০৬ সালের ২৩ জুন মতিউর রহমানের দেহাবশেষ পাকিস্তান হতে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনা হয়। তাঁকে পূর্ণ মর্যাদায় ২৫শে জুন শহীদ বুদ্ধিজীবী গোরস্থানে পুনরায় রাস্ট্রিয় মর্যাদায় সমাহিত করা হয়।
বাংলাদেশী একজন শহীদ মুক্তিযোদ্ধা। বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে চরম সাহসিকতা আর অসামান্য বীরত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ যে সাতজন বীরকে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সামরিক সম্মান “বীরশ্রেষ্ঠ” উপাধিতে ভূষিত করা হয় তিনি তাদের মধ্যে অন্যতম।
অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ মতিউরনগর গ্রামে যাদুঘর এবং পাঠাগার স্হাপন করেছে সরকার।
তাঁর নামে গড়ে উঠা জেলা উপজেলার বিভিন্ন সংগঠন গুলো যথাযোগ্য মর্যাদায় জন্ম- মৃত্যুসহ বিভিন্ন দিবস গুলোতে নানান কর্মসূচি পালন করে থাকে।
বীরশ্রেষ্ঠ মতিউরনগর গ্রামের স্মৃতি জাদুঘর ও মাহমুদাবাদ নামা পাড়ায় ম্যুরালে শ্রদ্ধা নিবেদন আলোচনা সভা মিলাদ দোয়া বিনামূল্যে রক্তের গ্রুপ নির্ণয়সহ দিনব্যাপী অনুষ্ঠান রয়েছে।
Leave a Reply